সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থসেবার মান বৃদ্ধি: সময়ের দাবি
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত দীর্ঘদিন ধরেই নানা সংকট ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। দেশের কোটি কোটি মানুষ, বিশেষত দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি, এখনও সরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। তবে দুঃখজনকভাবে এই হাসপাতালগুলোর সেবার মান, অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি এবং ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে সাধারণ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই এখনই সময় সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থসেবার মান বৃদ্ধির দিকে গুরুত্ব দেওয়ার।
কেন মান উন্নয়ন জরুরি?
সরকারি হাসপাতালগুলো দেশের স্বাস্থ্যসেবার মূল ভিত্তি। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত মানুষের সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকা, ওষুধের ঘাটতি, দুর্নীতি, যন্ত্রপাতির অভাব, এবং পরিষেবায় অবহেলা — এসব কারণে মানুষের মধ্যে ভরসা হারিয়ে যাচ্ছে।
কীভাবে মান উন্নয়ন সম্ভব?
১. চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা বৃদ্ধি: পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ এবং তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
২. যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামোর আধুনিকীকরণ: আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি।
৩. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি রোধে শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
৪. ই-হেলথ সিস্টেম চালু: রোগীর তথ্য ডিজিটালভাবে সংরক্ষণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি সহজতর করতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৫. ওষুধ সরবরাহের নিশ্চয়তা: জরুরি ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সবসময় হাসপাতালে উপলব্ধ রাখতে হবে।
৬. সেবাদানকারীর মানসিকতা পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর্মীদের পেশাগত নৈতিকতা ও মানবিক আচরণ গড়ে তোলা জরুরি
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে টেকসই, মানসম্মত ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সরকারি হাসপাতালগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধি অপরিহার্য। এটি শুধু একটি উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নয়, বরং জনগণের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। এখনই সময় এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার।
