দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে দিন দিন। করনীয় কি?

রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনা ছাড়াও প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এমনকি দিনদুপুরেও বিভিন্ন যানবাহনে ছিনতাই হচ্ছে অভিনব কায়দায়। ছিনতাইকালে ছিনতাইকারীরা ব্যবহার করছে দেশীয় ধারালো অস্ত্র এবং আক্রান্তরা বাধা দিতে গেলে কুপিয়ে জখম করা হচ্ছে তাদের। রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো তো বটেই, অলিগলিতেও হরদম ছিনতাই হচ্ছে এবং এ অপকর্ম করছে প্রধানত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। বড় কথা হলো, অলিগলির ছিনতাইকারীদের এলাকার প্রায় সবাই চেনে, তারা এলাকারই বাসিন্দা এবং তাদের মুখ সুপরিচিত। তারপরও তাদের বাধা দেওয়া যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উল্লেখযোগ্য তৎপরতা না থাকার কারণে ছিনতাইকারীদের দমানো যাচ্ছে না। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় যদিও বা কোথাও কোথাও ছিনতাইকারীদের উপদ্রব কমে; কিন্তু সুযোগ পেলেই তারা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে। অবস্থা এখন এমন যে, নগরবাসী রাস্তায় বেরোলেই সার্বক্ষণিকভাবে ভীতসন্ত্রস্ত থাকেন, কখন তারা ছিনতাইয়ের শিকার হন। বাসাবাড়িতে ঢুকেও অস্ত্রের মুখে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এমনকি এসব ঘটছে অভিজাত এলাকায়ও।

৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে গত সরকারের পতন হওয়ার পর থেকেই লক্ষ করা গেছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর অপরাধবোধ থেকে সাধারণভাবে পুলিশের মনোবল ভেঙে গেছে। তারা তাদের দায়িত্ব আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করা থেকে বিরত থাকছেন। প্রথম দিকে তো ছাত্রসমাজই ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেছিল। পুলিশের মনোবল নানা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে কিছুটা ফিরিয়ে আনা গেলেও তারা এখনো তাদের দক্ষতা শতভাগ কাজে লাগাচ্ছেন না। এই শৈথিল্য কাজে লাগাচ্ছে ছিনতাইকারী ও অন্য অপরাধীচক্র। এ অবস্থা বেশিদিন চলতে পারে না অবশ্যই। ছিনতাই ও অন্যান্য অপরাধ দমন করা না গেলে আগামীতে এ শহরে কেউ আর নিরাপদবোধ করবে না। তাই আমাদের বক্তব্য হলো, সরকারকে এক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। দেশে এমনিতেই রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, এর সঙ্গে যদি অপরাধীদের অপতৎপরতা যুক্ত হয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি তাই কড়া নির্দেশ থাকতে হবে, বিশেষ করে অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোয় তারা যেন অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন। অপরাধ সংঘটিত হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানাগুলোকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

Maniruzzaman

I am Maniruzzaman, a free thinker and political commentator, dedicated to unraveling the complexities of Bangladesh’s political landscape.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button